প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৫, ২০২৫, ৮:০৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ১৬, ২০২২, ১:৪২ অপরাহ্ণ
হিলিতে হিড়িক পড়েছে আমন ধান কাটা-মাড়াই

মোসলেম উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চলতি আমন মৌসুমে দিনাজপুরের হিলিতে হিড়িক পড়েছে ধান কাটা-মাড়াই। আলু চাষের জায়গা খালি করছে এসব আমন ধান কেটে। ভাল ফলন ও দাম ভাল থাকায় খুশি ধানচাষিরা। এবার জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে, জানিয়েছেন কৃষি অধিদপ্তর। হিলির বিভিন্ন আমন ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, শুরু হয়েছে শীতকালীন আলু চাষ। আবার পাক ধরেছে ধানের, সেজেছে সোনালি সাজে। মাঠে মাঠে ছোড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে আছে সোনালি রঙের কাটা ধান। ধান কেটে আঁটি বেঁধে সপ্তাহখানেক খোলা মাঠে ফেলে রাখছেন কৃষক। দেখে মনে হচ্ছে যেন মাঠে সোনা ছিটিয়ে পড়ে আছে। পরে ধানের সাথে খড় শুকিয়ে তা খোলায় নিয়ে যাচ্ছে কৃষক। মাঠ থেকে ধান তুলার সাথে আলু চাষের জন্য জমিতে ফেলা হচ্ছে গোবর সার।
চলতি আমন মৌসুমে বর্ষার পানি পর্যাপ্ত না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন আমন চাষিরা। আবার দেখা দিয়েছিলো সার সংকট এবং হঠাৎ তেলের দাম বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে ধান চাষে খরচ বেশি হয়েছিলো কৃষকদের। আবার ধান কাটা-মাড়াইয়ে বিঘাপ্রতি খরচ লাগছে ৬ হাজার টাকা মতো। তবে যদি ধানের দাম সরকার বাড়ায় তাহলে লাভের মুখ দেখবেন, বলছেন আমন চাষিরা।
হিলির চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক অরিন্দম সরকার বলেন, এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। আশানুরূপ ফলন ভাল হয়েছে। বর্ষার পানির উপর নির্ভর করে আমন ধান চাষ করা হয়। তবে চলতি আমন মৌসুমে বর্ষার পানি ঠিকমতো না পাওয়ায় বিপাকে পরতে হয়েছিলো। সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। তারপরও ছিলো সার সংকট এবং তেলের দাম বৃদ্ধি। সরকার যদি ধানের দাম বাড়ায় তাহলে আমাদের আশা বা স্বপ্ন পুরন হবে।
জালালপুর গ্রামের কৃষক আবু বক্কর বলেন, আমি গরীব মানুষ, তেমন বেশি আবাদি জমিজায়গা নেই। মাত্র এক বিঘা আবাদি জমি আছে। এক বিঘা জমি চাষ করেই আমার সংসার চলে। ছেলে-মেয়ে নেই, দুই জনের সংসার। এই মাঠে আমার জমিতে সবচেয়ে ভাল ধান হয়েছে। সামান্য জমি আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে চাষাবাদের কাজ করি। ধান কাটছি, আলু চাষ করবো। আশা করি ১৮ থেকে ২০ ধান পাবো।
ধান কাটা শ্রমিকরা বলেন, এবার বর্ষা নাই, মাঠে কোন পানি নেই। এতে আমাদের ধান কাটতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। আমরা ৬ জন এক সাথে ধান কাটছি। বিঘাপ্রতি ৬ হাজার টাকা ধান কাটা-মাড়াই নিচ্ছি। দিনে দেড় থেকে দুই বিঘা জমির ধান কাটতে পারছি।
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মোছাঃ মমতাজ সুলতানা বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় ৮ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। আলু চাষের জন্য কৃষকেরা তাড়াতাড়ি ধান কাটছেন। শতকরা সাড়ে ১২ বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। ফলন অনেক ভাল, আশা করছি কৃষক তাদের কাঙ্খিত ফলন সময় মতো ঘরে তুলবেন।
এবিষয়ে দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, দিনাজপুর জেলা বিভিন্ন ফসলে ভরপুর। চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষক। আগাম লাগানো ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ করেছেন কৃষকেরা।
দিনাজপুর জেলা সবুজে ঘেরা, সব ধরনের পর্যাপ্ত রবিশস্য হয়ে থাকে এই জেলায়। শুরু হয়েছে আলুর মৌসুম সহ শীতকালীন সকল সবজির চাষ। আমন চাষিরা ধান কাটা-মাড়াই করে, ঐসব জমিতে এসব সবজি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কর্মচারীর কৃষকদের পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
সম্পাদক : মোরশেদ মানিক
বি . এ, এল এল বি; ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম
প্রকাশক: রাহাতুল মওলা রাহাত
অফিসঃ মওলা সুপার মার্কেট, ঢাকা মোড়, বিরামপুর, দিনাজপুর।
মোবাইল: ০১৯১৫০৫০৩৫৮
ইমেল: morshedmanik.news@gmail.com editor@positivebd24.news
© 2023 Positivebd24. All rights reserved. Designed by moinulit