প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৫, ২০২৫, ১০:৫৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ২:০৫ অপরাহ্ণ
ছাত্রদের নতুন দলকে আমরা স্বাগত জানাবো: মির্জা ফখরুল

পজিটিভ বিডি ২৪ডট নিউজ (ঢাকা): বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ছাত্রদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগ ইতিবাচক। তাদের নেতৃত্বে দল তৈরি হলে আমরা স্বাগত জানাবো।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যেসব নতুন ছাত্র সংগঠন তৈরি হয়েছে আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। যখন ছাত্ররা দল তৈরি করবেন আমরা স্বাগত জানাবো। তবে তার মানে এই নয় যে, তারা সরকারে বসে, সরকারের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দল গঠন করবেন। সেটা কখনই মেনে নেয়া হবে না, জনগণ মেনে নেবেন না।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন ধারার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্রদল ঢাকা মহানগরের সদস্য সংগ্রহ, ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফরম বিতরণ করে উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়া, এ কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা তাকে সমর্থন দিয়েছি। তাদের পাশে আছি। তারাও চেষ্টা করছেন অতিদ্রুত কিছু কাজ শেষ করে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার। কিন্তু এর মধ্যেই কতগুলো বিষয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহটা দিন-দিন বাড়ছে।
‘ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তাহলে তারা অংশ নিতে পারবে’ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকার এবং সরকার প্রধানকে বলতে চাই, আপনি অবিলম্বে এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে জনগণের যে আস্থা আপনাদের ওপরে আছে সেই আস্থাও থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রথম বলেছিলাম-যদি অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা হারায় তাহলে আরেকটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। কেনো বলেছিলাম তা এখন প্রমাণ হচ্ছে। তখন একজন (উপদেষ্টা) বলেছিলেন আমি একটি এক-এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক-এগারোর ভুক্তভোগী, এক-এগারো যারা সৃষ্টি করেছিলো তারা টিকতে পারেনি জনগণের কাছে।’
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ‘জ্ঞানচর্চা’র ওপর গুরত্বারোপ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের শুধুমাত্র আন্দোলন, সংগঠন এসব করলেই চলবে না। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে অবশ্যই জ্ঞানচর্চাটা করতে হবে। জ্ঞানচর্চাই হবে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে মূল কেন্দ্র। তা না হলে আমরা সামনের দিকে এগুতে পারবো না।’
যারা মেধাবী, তাদের সামনে আনার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমি নিজেই ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। ৬০-এর দশকে ছাত্র রাজনীতি করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সময়ে আমাদের সংগঠন পড়াশোনার জন্য স্টাডি সেল তৈরি করতো। সেখানে পড়াশোনা হতো, পরীক্ষা হতো, তারপরে পদোন্নতি হতো। পদ পাওয়া নির্ভর করতো যে আমি কতটুকু জানি তার ওপরে। এই বিষয়টা যদি আমরা ছাত্রদলের মধ্যে চালু করতে পারি নিঃসন্দেহে ছাত্রদল হবে শক্তিশালী সংগঠন। আমি অনুরোধ রাখবো- এ রকম চিন্তাভাবনা নিয়ে আসতে হবে।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমবিবিএস পাস করে বিদেশে সরাসরি ভর্তি হতে পারে না। কারণ ওরা (বিদেশ) মনে করে যে, এখানে যে এমবিবিএস পড়াশোনা হয়, সেটা সঠিক হয় না। কারণ শিক্ষার ব্যবস্থাটা আগে এমন ছিল যে, একজন শিক্ষার্থী সর্ব বিষয়ে পারদর্শী হতে পারে তার ব্যবস্থা ছিল।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে আমরা এখন ক্রান্তিকালে এসে পৌঁছেছি। এই লড়াইয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য, টলারেন্স এবং মেধার চর্চা করা। আর সাইবার ওয়্যার, সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমাদেরকে সক্রিয় হতে হবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র নিজেদের ছবি দিয়ে, একটা মিছিলের ছবি দিয়ে, পোস্টারের ছবি দিয়ে কাজ করে বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া যাবে না। তোমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলতে শুরু কর। এটা তোমাদের দায়িত্ব। তোমরা মোবাইলের প্রচার-প্রচারণা ভালো বোঝ, ওখানে লড়াইটা চালাও, ওই জায়গায় যদি তোমরা লড়াই করতে পারো- তাহলে কেউ তোমাদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না।
আলোচনা সভায় এবার ‘স্লোগান’ না থাকায় নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে খুব আমার ভালো লাগছে যে, কোনো স্লোগান হয়নি, হচ্ছে না। এটা আমার খুব আনন্দ লাগছে যে, আমার মনে হচ্ছে যে, এতো দিন যে কথা বলেছি অন্তত আজকে একটা বাস্তবায়ন হয়েছে।’
কারণ আজকে কেবল স্লোগান ছিল, ছাত্রদল-ছাত্রদল। কিন্তু তোমরা মাঝে-মধ্যে স্লোগান দাও যে, ওমুক ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে, এটাও দরকার নাই। আমাদের ভাই একজনই তারেক রহমান, আমাদের নেত্রী একজনই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের দার্শনিক আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা একজনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। মাঝেখানে কোনো ভাই-টাই নাই। সবাই ডিসিপ্লিন মানতে হবে, ছাত্রদলের নেতা রাকিব, নাছিরের নেতৃত্বে মানতে হবে অর্থাৎ একটা সুসংগঠিত ছাত্রদল গড়ে তুলতে হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের মোস্তফা জামান, ছাত্রদলের পূর্বের সভাপতি সোহাগ ভুঁইয়া, উত্তরের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণের সভাপতি শামীম মাহমুদ ও পশ্চিমের সভাপতি রবির খান বক্তব্য রাখেন।
সম্পাদক : মোরশেদ মানিক
বি . এ, এল এল বি; ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম
প্রকাশক: রাহাতুল মওলা রাহাত
অফিসঃ মওলা সুপার মার্কেট, ঢাকা মোড়, বিরামপুর, দিনাজপুর।
মোবাইল: ০১৯১৫০৫০৩৫৮
ইমেল: morshedmanik.news@gmail.com editor@positivebd24.news
© 2023 Positivebd24. All rights reserved. Designed by moinulit